প্রাসঙ্গিক তথ্য
১। যে ফসলের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে সে ফসল অনুযায়ী স্প্রে মেশিন নির্বাচন করতে হবে । যেমন মাঠ ফসলের জন্য হ্যান্ড প্রেয়ার, শক্তি চালিত ন্যাপসেক স্প্রেয়ার, ব্রোয়ার এবং বৃক্ষজাতীয় ফসল বা ফল বাগানের জন্য ফুট পাম্প ইত্যাদি ।
২। আক্রমণকারী পোকার ধরন ও ফসল ক্ষেতের আকার ও ফসলের প্রকৃতি অন্যায়ী প্রেমেশিন নির্বাচন করতে হবে । ছোট বাগান হলে পদপৃষ্ঠ স্প্রেয়ার (Foot pump) বড় বাগান হলে ব্রোয়ার ফুট পাম্প ইত্যাদি ।
৩। কীটনাশকের গঠনের ওপর ভিত্তি করেও সিঞ্চন যন্ত্র নির্বাচন করতে হবে। যেমন-পাউডার জাতীয় কীটনাশকের জন্য ডাষ্টার এবং তরল কীটনাশকের জন্য হ্যান্ড প্রেয়ার, পাওয়ার প্রেয়ার, বোয়ার ফুট পাম্প ইত্যাদি ।
প্রয়োজনীয় উপকরণ
১। হ্যান্ড স্পেয়ার/পাওয়ার প্রেয়ার/পদ পৃষ্ঠপ্রেয়ার
২। কীটনাশক
৩ । নাড়ন কাঠি
৪ । কীটনাশক প্রতিরোধক পাষোক
৫ । ফসলের ক্ষেত্র (শস্য মাঠফল/ বাগান)
৬। সাদা কাগজ, পেনসিল, রাবার ইত্যাদি
কাজের ধারা
১। ব্যবহারের জন্য নির্বাচিত সিঞ্চন যন্ত্রটি ব্যবহারের উপযোগী আছে কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে । প্রধানত: নিম্নলিখিত বিষয় পরীক্ষা করার প্রয়োজন হবে । (ক) পাম্প করলে যন্ত্রে বাতাস আটকে থাকে কিনা (খ) নজেল দিয়ে পানি সঠিকভাবে নির্গমন হয় কিনা
২। এখন ব্যবহার উপযোগী সিঞ্চন যত্রটির চারভাগের একভাগ পরিষ্কার পানি দ্বারা ভর্তি করতে হবে ।
৩। তারপর সিঞ্চন যন্ত্রে একবারে যতটুকু নির্বাচিত কীটনাশক প্রয়োজন তার চারভাগের একভাগ সিঞ্চন যনেত্রর পানির মধ্যে ঢালতে হবে এবং নাড়ন কাঠি দ্বারা ভালোভাবে নেড়েচেড়ে মিশাতে হবে।
৪ । এরপর আবার চার ভাগের একভাগ পানি ও পূর্বের সমপরিমাণ কীটনাশক মেশিনে ঢালতে হবে এবং নাড়ন কাঠি দ্বারা নাড়াচাড়া করে ভালোভাবে মিশাতে হবে ।
৫ । এবার সিঞ্চন যনেত্র নির্ধারিত দাগ পর্যন্ত সর্বশেষ পানিটুকু ও কীটনাশকটুকু ঢালতে হবে এবং নাড়ন কাঠি দ্বারা ভালোভাবে মিশাতে হবে ।
৬ । অতঃপর কীটনাশক ঢালার পথ অর্থাৎ সিঞ্চন যন্ত্রের মুখ ভালোভাবে বন্ধ করতে হবে ।
৭ । এখন হাতলের সাহায্যে পিস্টনের উঠানামা করিয়ে প্রয়োজন মাফিক পাম্প করতে হবে/ফুট পাম্পের ক্ষেত্রে পায়ের সাহায্যে চাপ দিয়ে পাম্প করতে হবে । যতক্ষণ পর্যন্ত পাম্প করতে খুব জোর না লাগে ততক্ষণ পর্যন্ত পাম্প করতে হবে ।
৮ । এবার কীটনাশক প্রতিরোধক পোকাক পরিধান করতে হবে এবং সিঞ্চন যন্ত্রটি কাঁধে তুলে নিতে হবে ।
৯ । যে জমিতে কীটনাশক ছিটাতে হবে সে জমির একপ্রান্তে গিয়ে দাঁড়াতে হবে । ঘাসের টুকরো, পাতা উড়িয়ে বা ধুয়ার সাহায্যে বায়ু প্রবাহের দিক জেনে নিতে হবে।
১০। এখন সিঞ্চন যন্ত্রের ট্রিগারে চাপ দিয়ে বাতাসের অনুকূলে সমগতিতে এগিয়ে যেতে হবে এবং স্প্রে করতে হবে । সতর্ক থাকতে হবে যাতে কীটনাশক গায়ে না পড়ে ।
১১ । এভাবে জমি/বাগানের এক প্রান্ত হতে অন্য প্রান্তে পৌছানারে পর প্রথম বার স্প্রে কৃত স্থান বাদ দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাস মোতাবেক দূরত্ব নিয়ে আবার জমির পূর্বের প্রান্তের দিকে ফিরে আসতে হবে। এভাবে জমিতে প্রে শেষ করতে হবে । সিঞ্চন যন্ত্রের মিশ্রণ শেষ হয়ে গেলে পূর্বের ন্যায় পুনরায় মিশ্রণ তৈরি করে যন্ত্রটি ভরে নিতে হবে এবং পূর্বের পদ্ধতিতে জমিতে স্প্রে করা শেষ করতে হবে।
১২ । পাতার আক্রমণকারী পোকার জন্য গাছের উপর এবং কাণ্ডে বা নিচের দিকে আক্রমণকারী পোকার জন্য পাতার নিচে স্প্রে করতে হবে।
১৩। ফলের বাগানে/উচু বৃক্ষের ক্ষেত্রে পদপৃষ্ঠ প্রেয়ার ব্যবহারের সময় প্রয়োজনীয় কীটনাশক ও পানি অনুমোদিত মাত্রায় পৃথক কন্টেইনার বালতিতে মিশিয়ে নিতে হবে এবং প্রেয়ারের সাকসন পাইপের নিম্ন প্রান্ত কনটেইনার বা বালতির ভেতর মিশ্রিত কীটনাশকে ডুবিয়ে প্রের কাজ সম্পন্ন করতে হবে ।
সাবধানতা
১। সিঞ্চন যন্ত্র ব্যবহারের কলাকৌশল অনুশীলন কালে কোনরূপ ধূমপান করা যাবে না বা অন্য কোন খাদ্য গ্রহণ করা যাবে না ।
২। কলাকৌশল অনুশীলনের পর হাত ভালোভাবে সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে ।
৩। স্প্রে কার্যক্রম শেষে পরিধেয় সকল কাপড় এবং স্প্রে মেশিন ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে ।